In fact, the general concept of jungle philosophy will change when you come to Periyar. 'Peri' means big, and 'R' means river. It was so before. A huge lake has been created as a result of the dam on the river Periyar. The vast area that was flooded during the construction of the dam was later flooded, resulting in the submergence of forests. The bald stalks still stand submerged in the water as a pattern on the trees. The experience of seeing wildlife in the Periyar by launching in the water of the lake surrounded by mountains is also rare.


কেরল তথা ভারতের যাবতীয় মশলার ফলন এই রাজ্য জুড়ে। সন্ধ্যা নেমেছে। পথের দুধারে দোকানগুলােয় আলােও জ্বলে উঠেছে। পরতে পরতে সাজানাে মশলা। লবঙ্গ-এলাচ-দারুচিনি-গােলমরিচ। এতাে বড় মাপের, এতাে তাজা কলকাতায় দেখাই যায় না। ম্যানেজার আরাে বললেন, এবার আমরা জঙ্গলে ঢুকব। চার কিলােমিটার পথ যেতে হবে টাইগার রিজার্ভের মধ্যে দিয়ে।

দেখতে দেখতে বাসটা অন্ধকারে মিশে গেল। সমানে কেবল হেডলাইটের আলাে। তাও তীব্র নয়। ফ-লাইট জ্বেলে মৃদু করা হয়েছে। বাসযাত্রীরা জানালা দিয়ে উঁকিঝুঁকি মারছে খুব কৌতুহল নিয়ে। যদি কিছু দেখা যায়। টাইগার রিজার্ভ বলে কথা।

ভারী ভারী গাছের শরীর বাঁচিয়ে বাসটা যেখানে থামল, তার সামনে আলাে জ্বলছে। দোতলা সুন্দর বাড়ি। সামনে কেয়ারি করা বাগান। সেখানেও মৃদু আলাে দিয়ে সাজানাে। নিয়ন লাইটে জ্বলজ্বল করছে লেখা। পেরিয়ার হাউস।

ঘর দখলের পর কখন যে উষ্ণ-আমন্ত্রণ সমমনস্ক মানুষদের একঘরে বন্দি করল, কেউ সঠিক বলতে পারবে না। আড্ডা জমে উঠতেই দলপতি মেজদা বলে উঠলেন, তাড়াতাড়ি শেষ কর। একটু জঙ্গলটা ঘুরতে যাব না।

পেরিয়ার অরণ্য তখন সকলের কাছেই অজানা। অচেনা বলাই ভাল। তাই টর্চ, লাঠি নিয়ে জনা ছয়েক বঙ্গসন্তান জঙ্গল দর্শনে বেরােলেন। পথে অজস্র রসালাপ করতে করতে কখন যে সকলে চুপ করে গেছে, কেউ জানে না। এদিকটায় একদম আলাে নেই। পথের দুধারে জঙ্গল। ঘন ঝােপ। টর্চের আলােয় শুধুমাত্র সামনের পথটাই দেখা যাচ্ছে। চারদিকে জমাটবাঁধা অন্ধকার। মাঝে মাঝে মৃদু কথন চলছে আপসে। ভট্টাচার্যদা সিগারেট ধরাবার জন্য দেশলাইটা জ্বালতেই বাঁদিকের জঙ্গল থেকে ভারী শব্দ হল। মেজদা সকলকে আটকে দিলেন। ফিসফিস করে বললেন, চুপ। আর যেও না। ফিরে চলাে।। হাতি হতে পারে। কিংবা ...!

হােটেলে ফিরে সকলেই মুখে কুলুপ এঁটেছিল। কাউকে বলেনি। পরের দিন সকালে যখন ঐ পথ ধরে বাসটা বােট জেটির কাছে যাচ্ছিল, বাসের মধ্যে কেবল চাপা হাসি। গুঞ্জন। কেউ বুঝতেই পারেনি। পারলে ছােটদের কাছে, মেয়েদের কাছে লজ্জায় মুখ দেখানাে যেত না। হয়ত জঙ্গল ঘােরাই বন্ধ হয়ে যেত।

আসলে পেরিয়ারে এলে জঙ্গল দর্শনের সাধারণ ধারণাটাই পাল্টে যাবে।‘পেরি’ মানে বড়, আর’ অর্থে নদী। আগে তাই ছিল। পেরিয়ার নদীতে বাঁধ দেওয়ার ফলে তৈরি হয়েছে এক বিশাল হ্রদ। বাঁধ তৈরির সময় যে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছিল, পরে বন্যাতেও তারই ফলস্বরূপ বনাঞ্চল জলগর্ভে চলে যায়। ন্যাড়া ডালপালার গাছগুলাে নিদর্শন হিসাবে এখনও জলের মধ্যে গাডুবিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পাহাড়ের ঘেরাটোপে হ্রদের জলে লঞ্চে করে পেরিয়ারে বন্যপ্রাণী দর্শনের অভিজ্ঞতাও তাই বিরল।  ৭৭৭ বর্গ কিলােমিটার পেরিয়ার ওয়াইল্ড লাইফ স্যাঙ্কচুয়ারি তৃণভােজীদের স্বর্গও বলা যেতে পারে। তাই পেরিয়ার কেবল হাতির খাস তালুক নয়। বাইসনেরও সংখ্যাধিক্য আছে। উদ্ভিদ ও প্রাণীকুল পেরিয়ারে উল্লেখযােগ্য। চিরহরিৎ বনভূমিতে বর্ষায় প্রায় ১৪৩ প্রজাতির অর্কিড দেখা যায়। ১৭১টি তৃণজাতীয় বৃক্ষ দেখা যায়। কোথাও কোথাও জঙ্গল এত গভীর যে সূর্যের আলাে পর্যন্ত ঢুকতে পায় না। সেখানেই জন্মায় নানা প্রজাতির গুল্ম, ফার্ণ প্রভৃতি। সরীসৃপের মধ্যে উল্লেখযােগ্য ফ্লাইং স্নেক ও লিজার্ড। আর থেক্কাডির এই বনাঞ্চল জুড়ে রয়েছে ২৬৫ প্রজাতির পাখি। বন্যপ্রাণীর মধ্যে বুনাে শুয়াের, চিতল হরিণ, চিঙ্কারা তাে আছেই। ১৯৭৯ থেকে প্রােজেক্ট টাইগারের আওতায় এলেও বাঘের দর্শন কদাচিত্ত মেলে।  বােট জেটিতে নির্দিষ্ট লঞ্চটা আসতেই হুড়মুড় করে দোতলা দখলের প্রতিযােগিতা শুরু হয়ে গেল। ডেক চেয়ারে গা এলিয়ে দিতেই লঞ্চ চলতে শুরু করল। সকালে প্রথম কুইজ। তাই আকাশ অনেকটাই মেঘলা। সামনে স্তব্ধ জল কেটে লঞ্চটা অতি ধীরে এগিয়ে চলেছে। একের পর এক সবুজ পাহাড় নেমেছে হ্রদের পাশে। তার প্রান্তদেশ সবুজ ঘাসে মােড়া। জলযানটি নির্দিষ্ট গতিতে সযত্নে ন্যাড়া গাছের ডালগুলাে পাশ কাটিয়ে কখনাে পাহাড়ের কাছ দিয়ে, কখনও লেকের মধ্যে দিয়ে পথ করে নিচ্ছে। গাছের ন্যাড়া ডালে জলে ভেজা পানকৌড়ি ডানা মেলে এমনভাবে বসে আছে, যে দূর থেকে গাছের শুকনাে ডাল বলেই মনে হয়। চোখে বায়নাে লাগিয়ে একজন চেঁচিয়ে উঠল—ঐ দেখুন, ঐ উঁচু পাহাড়টায়। ঠিকই, দুই পাহাড়ের মাঝে একটা উঁচু পাহাড়চূড়ায় তিনটে হাতি নিজেদের মধ্যে খেলা করে চলেছে। লঞ্চটা বাঁক নিতেই একদল বুননাশুয়াের দেখা গেল জলকাদার মধ্যে। জঙ্গল ভ্রমণের এক বিচিত্র অভিজ্ঞতা। দেখতে দেখতে লেক প্যালেসের কাছে লঞ্চটা একটু মন্থর হল। ত্রিবাঙ্কুর রাজাদের গ্রীষ্মবাস বর্তমানে বিলাসবহুল সরকারি অতিথিশালা। পেরিয়ার অরণ্যকে আরাে কাছে পেতে হলে লেক প্যালেস সত্যিই অনন্য। সকালের ঠান্ডা। হাওয়ায় সকলেই বােধহয় একটু ঝিমিয়ে পড়েছিল। এমন সময় কান্ডটা ঘটল। গাছের ডাল বাঁচিয়ে বাঁক নিতেই ধরা দিল সেই চিরকাঙ্খিত দৃশ্য। একটা হাতির পুরাে পরিবার জলকেলি করতে নেমেছে লেকের জলে। পুরাে লঞ্চটা তখন উত্তেজনায় কাঁপছে। আর একের পর এক দ্রুত সার্টার পড়ছে।

কীভাবে যাবেন :. যে কোন দিক থেকে বাস যাচ্ছে। মাদুরাই-১০৬ কি.মি.। কোট্টায়াম-১১৪ কি.মি.। ত্রিবান্দ্রম-১৬৫ কি.মি.। কোচি-১৯০ কি.মি., কুমিলি থেকে। আর কুমিলি থেকে থেক্কাডি বা পেরিয়ার অরণ্য-৪ কি.মি.।