Chittababu was offered a picture of the 800-foot-high ‘Muraburu’, part of the Madha hills in Ayodhya in Purulia district. Mujaburu is a hill that has no vegetation on its wide rocky slope. Seeing the mountain, Chittababu liked it. Within a year, he had recruited forty students from the local tribals, not from the Calcutta Art College. For the first four years, they were taught at the foot of Muraburu's hill. The teaching was how to curve a stone bulldozer. Work with their chisels, hammers, drills. This is how the bird hill begins.

১৯৯১ সালে কলকাতার একাডেমী অফ ফাইন আর্টসএ শিল্পী চিত্তদের প্রথম একক প্রদর্শনীকে ঘিরে ঘটলাে এক অভূতপূর্ব ঘটনা। তার সৃষ্টবাইশ ফুট দীর্ঘ পাখীর অবয়ব কিছুতেই ঢােকানাে গেল না একাদেমীর দরজা দিয়ে। বাধ্য হয়ে পাখীর ডানা হেঁটে ফেলতে হল শিল্পীকে। তাঁর শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর জন্য এতবড়াে গ্যালারীই নেই এই শহরে। দরকার নেই তার শহুরে চার দেওয়ালের আলাে ঝলমলে গ্যালারী। প্রকৃতির মাঝেই তিনি খুঁজে নেবেন তার সাধের ক্যানভাস। তেমন কোনও পাথুরে পাহাড় পেলে গােটা পাহাড়টা জুড়েই আঁকবেন তিনি পাখির প্রতিকৃতি। পরিকল্পনামতাে সেই পাহাড় খুঁজতেই তিনি বেরােলেন রাজ্যে রাজ্যে। তৎকালীন তথ্য ও সাংস্কৃতিক মন্ত্রী শ্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য র নজরে আসে সেই খবর। খোঁজ খবর নিয়ে তিনি পুরুলিয়া জেলার অযােধ্যার মাধা পাহাড়ের অংশ, ৮০০ ফুট উচ্চতার ‘মুড়াবুরু’ কে দেওয়ার প্রস্তাব দেন চিত্তবাবুকে। মুজাবুরু’ হল এমনই এক পাহাড় যার বিস্তীর্ণ পাথুরে ঢালে কোনও গাছপালা নেই এক্কেবারে ন্যাড়া। পাহাড়টা দেখে চিত্তবাবুর পছন্দ হল। মেনে নিলেন তিনি বুদ্ধবাবুর প্রস্তাব। কলকাতার আর্ট কলেজের নয়, স্থানীয় আদিবাসীদের মধ্যে থেকে বছর খানেকের মধ্যেই তিনি যােগাড় করে নিলেন চল্লিশজন ছাত্র। প্রথম চার বছর মুড়াবুরু’ পাহাড়ের নীচেই তাদের শিক্ষা দেওয়া হত। শেখানাে হত পাথরের বােল্ডারে কি করে কার্ভ করা হয়। তাদের ছেনী, হাতুড়ি, ড্রিল দিয়ে কাজ। প্রথম দিকে যখন এখানে বিদ্যুৎ সংযােগ পৌছয়নি, সেই সময় ড্রিল মেশিন চালানের জন্য তাকে জেনারেটর ভাড়া করতে হত। পরে তার সৌজন্যেই এখানে বিদ্যুৎ সংযােগ পৌছয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার দেন দুই লক্ষ টাকা অনুদান। এদিক-ওদিক থেকে কিছু, আর বাকীটা নিজের পকেট থেকে দিয়ে শুরু করলেন কাজ। বর্তমানে মােট চব্বিশজন শিল্পী কর্মরত। এখনও অবধি তার পরিকল্পনার চল্লিশ শতাংশ কাজ হয়েছে। এখন পঁয়ষট্টিটি পাখি উড়ছে পাহাড় জুড়ে, তার মধ্যে সবচেয়ে ছােটটার দৈর্ঘ্য ৫৫ ফুট, বড়টা ১২০ ফুট। তার ইচ্ছে একশােরও বেশী পাখী এঁকে পাহাড়টা ভরে দেওয়ার। তাঁর কাজের জন্যই যে পাহাড়টা আজ আর ‘মড়াবুরু’ নয়, ‘পাখী পাহাড়’ নামেই পরিচিত হয়ে গেছে। তার আশ্চৰ্য কীর্তি দেখতে আজ ভীড় জমাচ্ছে দলে দলে পর্যটক। স্বপ্নপূরণের পথে দিব্যি এগােচ্ছিলেন আটান্ন বছরের চিরতরুণ এই শিল্পী। কিন্তু বাধ সেধেছে টাকা। অর্থের অভাবে সম্প্রতি বেশ কিছুকাল কাজ বন্ধ। এমনিতে তাে এখানে কাজ হয় বছরে মাত্র চার থেকে পাঁচ মাস। শুরু করা হয় অক্টোবরে। তীব্র গরম আর বর্ষায় এখানে কাজ করা অসম্ভব ব্যাপার।

পাখী পাহাড়ের নীচেই তার বাড়ির উঠোনে বসে গল্প শুনছিলাম খােদ চিত্তবাবুর কাছেই। লম্বা, দোহারা চেহারা মুখে কাঁচাপাকা চাপ দাড়ি, ষাট ছুঁই ছুঁই শিল্পী মানুষটি ভীষণ মিশুকে। কথা বলতে বড় ভালবাসেন। চিত্তবাবুর বাড়ি থেকে পাখী পাহাড়কে বড় সুন্দর দেখায়। শাল-মহুয়া-পলাশের জঙ্গলে ঘেরা কালাে গ্রানাইট পাথরের মুড়াবুরু’র মসৃণ পূর্ব ঢালে ৮০০ ফুট x৮০০ ফুট দেওয়ালে আঁকা একঝাক রঙীন পাখী ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে আপন খেয়ালে। নীচের বড় বড় পাথরে ফুল, লতাপাতা, বন্য জন্তুর ছবি। এ গাঁয়ের নাম শ্রীরামপুর। গাঁটে বিট অফিসের পশ্চিমে পাকী পাহাড়। পাহাড়ের নীচ দিয়ে পাথর বিছানাে ঝরা মহুয়ায় ভরা এবড়ােখেবড়াে পথ চলে গেছে খুদুড়ি গ্রামের দিকে।

কী ধরনের রঙ তিনি এই চিত্রকলায় ব্যবহার করেছেন, যা কিনা এমন খােলা আকাশের নীচে ঝড় বৃষ্টিতেও অমলিন থাকে? প্রশ্নটা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল অনেকক্ষণ থেকেই। শুনলাম, তিনি আউটডাের এনামেল কালার ব্যবহার করেন। চিত্তবাবুর ভাবনায় আছে পাহাড়ের গায়ে অজন্তা, ইলােরার মতাে ছােট ছােট গুম্ফা তৈরি করা। সেখানে থাকবে পাখীদের জীবনবৃত্তান্ত সহ সম্পূর্ণ বর্ণনা। আর প্রবেশদ্বারে থকবে এক ‘মা পাখী’র প্রতিকৃতি। পাখী পাহাড়ের মূল ভাবনাটাই হল চিত্তবাবুর ভাষায় এ ফ্লাইট টু হারমােনি’,

গল্প করতে করতে শীতের সংক্ষিপ্ত বেলা পড়ে এল। পশ্চিমে ঢলে পড়া সূর্যের বিচ্ছুরিত আলােয় পাখী পাহাড় উদ্ভাসিত। আলাে আঁধারির মায়াজালে ভারি সুন্দর দেখাচ্ছে তাকে। জঙ্গল তেকে বেসে আসছে রকমারি পাখীর ডাক। শীতল বাতাস বইছে। হাড়ে কাপন লাগিয়ে। হঠাৎ চুপ করে গেলেন চিত্তবাবু। নিষ্পলক চোখে তাকিয়ে আছেন তার মানসকন্যার দিকে। দেখে মনে হল, পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা এক শান্তির আশ্রমে যেন সন্ন্যাসী নিজের ভদ্রাসনে বসেছেন ধ্যানে। আর কথা বাড়াইনি। চুপচাপ বেরিয়ে এসেছি তাঁর বাড়ি থেকে। যাওয়া : ট্রেনে চড়ে নামতে হবে বলরামপুরের রেলস্টেশন বরাভূম, সেখান থেকে গাড়ি বা ট্রেকারে মাঠাবুরু থেকে ৩ কিমি আগে ভুচুংডি মােড়ে নেমে ১ কিমি গেলেই পাখী পাহাড়।

ডাঃ অর্পণ রায় চৌধুরী