বাঙালি মাত্রই দার্জিলিং কিম্বা ডুয়ার্সে গিয়েছেন। সবাই হয়তাে দেখেছেন এই সেতুটাকে কিন্তু এই ব্রিজের ইতিহাস নিয়ে অনেকেরই কোনও ধারনা নেই। হ্যা, বাঘ সেতু বা করােনেশন ব্রিজের কথা বলছি। শিলিগুলি থেকে মাত্র ২২ কিলােমিটার দুরে তিস্তার উপর অবস্থিত এই সেতু। এই সেতুটি ডুয়ার্স, তথা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যােগাযােগের একটি প্রধান সেতু। ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক এই ব্রিজের উপর দিয়েই গিয়েছে। আগামী বছর এই সেতুটির ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। ১৯৪১ সালে এই ব্রিজ নির্মিত হয় প্রায় ৪ লক্ষ টাকা খরচ করে। ১৯৩৭ সালে ব্রিটেনের রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও রানি এলিজাবেথের রাজভিষেকে চিহ্নিত করতেই এই ব্রিজের নাম রাখা হয় করােনেশন ব্রিজ। তৎকালীন বাংলার গর্ভনর জন এন্ডারসন ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
দার্জিলিং পূর্ত বিভাগের শেষ ব্রিটিশ এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার জন চেম্বারস ব্রিজটির নক্সা এবং পরিকল্পানা করেন। সেতুটি তৈরি করে বম্বের ঠিকাদার সংস্থা জে. সি. গ্যামন। সেতুটি দ্রুত জমাটবদ্ধ কংক্রিটের তৈরি। তিস্তার জলােস্রোতের জন্য মাঝখানে কোনও পিলার তৈরি সম্ভবনয় তাই একটি মাত্র খিলান দিয়ে ব্রিজটি তৈরি করা হয়। এই একটি খিলানই দুই প্রান্ত থেকে সেতুটিকে ধরে রেখেছে। সেই’জন্য এই ব্রিজটি স্থাপত্য এবং গুরুত্বপূর্ণ। সেতুটির দুইদিকে পাথর দিয়ে গেঁথে তােলা হয়েছে। যাতে তিস্তার স্রোত কোনও বাধা না হয়। সেইজন্য এই সেতুটির স্থাপত্য শৈলী চমৎকার। আজও করােনেশন ব্রিজ চমৎকার কারিগরির এক জলন্ত নমুনা। চারদিকে সবুজের মাঝে তিস্তার প্যানারােমিক ভিউ দেখতে পাওয়া যায় এই সেতুর উপর থেকে। এই সেতু থেকে কিছুটা এগিয়ে গেলেই সেবকের কালীবাড়ি। এই সেতুটির শুরুতেই দুটি সিংহের মূর্তি থাকায় এর স্থানীয় নাম বাঘপুল।
0 Comments