Raipur is the capital of Chhattisgarh, the 27th state of India. Raipur is the capital of the Kalchuri kings of the past South Koshal.

ভারতের ২৬ তম রাজ্য ছত্তিশগড়ের রাজধানী রায়পুর। অতীতের দক্ষিণ কোশলের কালচুরি রাজাদের রাজধানী এই রায়পুর। বহু রাজবংশের উত্থান পতনের সাক্ষী এই শহর। রায়পুর জেলার জেলাসদরও রায়পুর। রায়পুরে গিয়ে অবশ্যই দেখতে হয় মহান্ত ঘাসিদাস মেমােরিয়াল মিউজিয়ামটি। রাজা মহান্ত ঘাসিদাস গভীর শিল্পনুরাগ ১৮৭৫ সালে জন্ম দেয় মিউজিয়ামটির। অষ্টকোনা ভবনে জীবতত্ত্ব, নৃতত্ত্ব, পুরাতত্ত্ব, ও সংস্কৃতি এই চারটি বিভাগ রয়েছে। শিল্পকর্মের সংগ্রহে সমৃদ্ধশালী মিউজিয়ামের অনন্য সম্পদ খ্রিস্টীয় দ্বিতীয় শতকের পিলারটি। কিরারি থেকে সংগৃহীত সাতবাহন রাজপ্রতিনিধিদের নামখােদিত পিলারটি এই ধরনের পিলারদের মধ্যে প্রাচীনতম। সােমবার ছাড়া প্রতিদিন দাশটা থেকে সন্ধ্যা পাঁচটা পর্যন্ত খােলা থাকে মিউজিয়ামটি। এই অঙ্গনের লাইব্রেরিটিও দেখে নেওয়া উচিত। মিউজিয়াম পর দেখা দরকার, রায়পুরে ৪৫০ বছরের প্রাচীন দুধাহারি মঠটি। মঠটি নান্দনিকতায় এক উৎকৃষ্ট উদাহণ। কথিত আছে জনৈক মহান্ত বলভদ্র দাস এরখণ্ড পাথরকে হনুমান জ্ঞানে পুজো করতেন। সুরহি নামের একটি গাভী দুগ্ধধারায় স্নান করাত শিলাখণ্ডটিকে। দেবতার নাম দুধাহারী এসেছে সেই থেকে। এরপর দেখার লালরঙের টাউন হলটি। ১৮৮৯ সালে ১৮২০০ টাকায় তৈরি টাউন হলটি ছিল ব্রিটিশ প্রশাসনের সদর দফতর। মহারানী ভিক্টোরিয়ার সম্মানে শুরুতে ভবনের নাম ছিল ভিক্টোরিয়া হল। পরবর্তীকালে নাম বদল হয়। এখানে রাখা কালাে স্টিম ইঞ্জিনটি অন্যতম দ্রষ্টব্য। রায়পুর শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে একটি দিঘি বা সায়র। সায়রের পাড়ে ১৯৩৭ সালে গড়া রাজপ্রাসাদে আজ বিলাসবহুল হােটেল হয়েছে। শহরের শেষে হাইওয়ে ছেড়ে কেশকলে বটানিক্যাল গার্ডেনটিও মনােরম। আছে চিলড্রেন পার্ক, কাফেটেরিয়ার। রায়পুর ছেড়ে জাতীয় সড়ক-৬ এর ধারে পূর্বমুখী ৩৪ কিলােমিটার দূরে আরং-এ একাদশ-দ্বাদশ শতকের মন্দিরের জন্য খ্যাত। দেওয়ালে জীর্ণতার ছাপ পড়লেও মন্দিরের চুড়াে ও গর্ভগৃহ এখনও অক্ষত। রয়েছে কষ্টিপাথরের তৈরি তিনটি মূর্তি। মন্দির গাত্রের মিথুন মূর্তিগুলি আকর্ষণীয়। রায়পুর থেকে ৭৭ কিমি আর আরং থেকে ১৭ কিমি গিয়ে বাঁ হাতে কাসডােলের পথে ২৪ কিমি যেতে শিরপুর। মহানদী তীরের সভপুরা রাজাদের একদা রাজধানী শিরপুর খ্রিস্টীয় ছয়-সাত শতকে বৌদ্ধধর্মের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে উঠে। সপ্তম শতকে হিউয়েন সাঙ ও আসেন এখানে। খননে প্রাপ্ত বৌদ্ধ মন্দির ও মনাস্ট্রিতে শায়িত প্রাকাণ্ড বুদ্ধমূর্তিগুলি শিরপুরের অন্যতম আকর্ষণ।

রায়পুর থেকে ১২৫ কিলােমিটার দূরে, রায়পুর জেলার উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বর ও নােয়াপাড়া গ্রামটির নাম থেকেই ১৯৭৫ সালে গড়ে উঠেছে ২৪৪.৬৬ বর্গ কিলােমিটার বর-ননায়াপাড়া অভয়ারণ্য। নিকটবর্তী রেল স্টেশন রায়পুর-ওয়ালটেয়ার রেলপথের মহাসমুন্দ। অসংখ্য টিলা আর নদী-নালা নিয়ে তৈরি এই অভয়ারণ্য। শাল, সেগুন, বাঁশ গাছের সখ্যতা রয়েছে এই আদিম অরণ্য। এখানে আছে বাঘ, প্যান্থার, চিতল, নীলগাই, বনবারা, লেপার্ড, শ্লথ বিয়ার, বার্কিং ডিয়ার, আর আছে দেড়শাের বেশি পাখির প্রজাতি।।

রায়পুর থেকে জাতীয় সড়র এনএইচ-৬ ধরে বােগাড়ি পৌছে ডানহাতি এনএইচ-২১৭ ধরে ৮০ কিমি দূরের মহাসমুন্দ জেলার খাল্লারি। খাল্লারি ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্ত্বিক গুরুত্বের জন্য প্রসিদ্ধ। পাহাড়েরচুড়ােয় খাল্লারি মন্দির। ভীমের পদচিহ্ন, কলস রয়েছে। রয়েছে মহাভারতের কিংবদন্তি।

চিত্রকোট জলপ্রপাত - জগদলপুরের মূল আকর্ষণ নায়াগ্রার মিনি সংস্করণ অশ্বক্ষুরাকৃতি চিত্রকোট জলপ্রপাত। বিন্ধ পর্বতমালায় ১৭২২. ৩২ ফুট থেকে ১৬২৬ ফুট অথাৎ প্রায় ৯৬.৩২ ফুট নিচুতে পিছলে পড়ছে এই জলপ্রপাতা। বর্ষায় আধ কিলােমিটারের বেশি জায়গা জুড়ে দুর্দম বেগে ঝাপিয়ে পরে ইন্দ্রাবতী নদী। যা ডাইনে বাঁক নিয়ে গিয়ে গােদাবরীতে মিশেছে। ইন্দ্রাবতীর এই রঙ্গ ইন্দ্রসভার মােহিনিদেরও হার মানায়। জল্লোচ্ছাসের রামধনু রং দেখে মন ভরে উঠে। ডােঙায় চেপে ভেসেও পড়া যায়। যেমন অপূর্ব সুন্দর এই জলপ্রপাত তেমনই সুন্দর এর পরিবেশ। চিত্রকোটে প্রবেশের জন্য দশ টাকা করে টোল লাগে। এখানে জলপ্রপাতের লাগােয়া পি ডাব্লু ডি-র রেস্ট হাউস এবং ছত্তিশগড় ট্যুরিজমের বাংলাে রয়েছে।

জগদলপুর থেকে ৩৯ কিমি দূরে কাঙ্গেরঘাটি ন্যাশনাল পার্ক। প্রকৃতি ও আদিম আদিবাসীদের বাসভূমি ২০৪ বর্গ কিমি ব্যাপ্ত এই পার্ক। আপনাকে নিয়ে যাবে অন্য এক জগতে। এই পার্কের প্রবেশদ্বারের বিপরীতে গ্রামমুখী পথে ৪ কিলােমিটার আরণ্যক পরিবেশে ১৬০ মি প্রশস্ত ১১০ মিটার উঁচু থেকে দুর্দম বেগে ঝাপিয়ে নামছে অন্যতম বৃহত তিরঙ্গড় জলপ্রপাত।