Rani Mussoorie Rocks of Gareyal is only 35 km away from Dehradun by road. This was the favorite holiday destination of the colonial rulers.
দেরাদুন থেকে সড়কপথে মাত্র ৩৫ কিমি দূরে গাড়ােয়ালের রাণী মুসৌরি শৈলাবাস। সবসময় বাস ও ট্যাকসি ছুটছে। একের পর এক বাঁক নেওয়া পাহাড়ী রাস্তায় চলা যেমন রােমাঞ্চকর, তেমনই মনােমুগ্ধকর চারপাশের দৃশ্যাবলী। ২০০৫ মিটার উচ্চতায় মুসৌরি শহরে ঢােকার খানিক আগে আবহাওয়াতে শীতের আমেজ লাগে। মুসৌরি তিল তিল করে সেজে উঠেছে ব্রিটিশ আমল থেকে। এ ছিল ঔপনিবেশিক শাসকদের প্রিয় অবকাশ যাপনের কেন্দ্র। মুসৌরির দেখার জায়গাগুলি শহরের নানা দিকে ভিন্ন ভিন্ন উচ্চতায় ছড়িয়ে রয়েছে। কোথাও যেতে হবে গাড়িতে, কোথাও বা রােপওয়ের কেবল কারে, কোথাও আবার স্রেফ পায়দলে। কন্ডাকটেড ট্যুরে মুসৌরি ও তার আশেপাশে বেড়ানাে যায়। জি এম ভি এনের ট্যুর আছে, এদের অফিস লাইব্রেরি বাজারে ঝুলাঘরের কাছে। ম্যাল রােডে হােটেল গাড়ােয়াল টেরেস থেকে এবং রােপওয়ের কাছে উত্তরাঞ্চল পর্যটন বিভাগের অফিস থেকেও সিট বুকিং করা হয়। মরশুমে দিনে তিনবার এবং অন্য সময়ে দুবার ঘণ্টা তিনেকের সফরে কেমটি জলপ্রপাত দেখানাে হয়, সকাল নটায় বেরিয়ে বিকেল পাঁচটায় ফেরা। কেমটি ফলস, যমুনা সেতু এবং লাখামণ্ডল সফর সকাল আটটা থেকে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত, পর্যাপ্ত সংখ্যক পর্যটক পাওয়া গেলে মরশুমে সকাল নটা থেকে সন্ধে ছটা পর্যন্ত ধনােলটি, কানহা ড্যাম, টেহরি ড্যাম ট্যুর করানাে হয়। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থাও একই ধরনের ট্যুর করায় এবং গাড়ি ভাড়া দেয়। বেড়ানাে শুরু করা যেতে পারে কেবল কারে ঝুলতে ঝুলতে গানহিল পৌঁছে। ম্যালের ওপরে ঝাউয়াঘর থেকে সিটি বাের্ড পরিচালিত রােপওয়ের যাত্রা শুরু। রােপওয়ের দূরত্ব ৪০০ মিটার এবং পায়ে হেঁটে বা ঘােড়ায় চেপেও ওঠা যায়। ঘােড়ার আস্তাবল ম্যাল রােড ও ক্যামেলস ব্যাক রােডের সংযােগস্থলে। গানহিল মুসৌরির দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাহাড়চূড়া। ব্রিটিশ আমলে ঘড়ি মেলানাের জন্য বেলা বারােটার সময় এই চূড়া থেকে কামান দাগা হত, তাই এই নামকরণ। গানহিল থেকে একদিকে যেমন দেখা যায় মুসৌরি শহর ও দুন উপত্যকার একাংশ, তেমনই অপরদিকে মেঘমুক্ত দিনে বহু দূরের তুষারাচ্ছাদিত শৃঙ্গমালা। মরশুমে গানহিলে নিত্য মেলার মজা। খাবার, স্মারক, শীতবস্ত্র ইত্যাদির দোকানে ভরে ওঠে চতুর্দিক। অনেকে রঙিন পাহাড়ী পােশাক পরে ছবি তােলান এখানে। মুসৌরির সর্বোচ্চ বিন্দু লালটিব্বা থেকেও (উচ্চতা ২৬১০ মিটার) কেদারনাথ, কামেট, বন্দরপুঞ্ছ ইত্যাদি শৃঙ্গ দেখা যায়। এদের সবচেয়ে সুন্দর লাগে সূর্যাস্তের কালে। এ ছাড়াও ট্যাকসি বা রিকশা ভাড়া করে বেড়িয়ে আসা যায় কাঠগােদাম টি, ৬ কিমি দূরে ভাট্টা জলপ্রপাত, ৪ কিমি দূরে মিউনিসিপ্যাল গার্ডেন (স্থানীয়রা বলে কোম্পানি বাগ) ও তার ভেতরে কৃত্রিম লেক, ৮ কিমি দূরে বেনং হিল ও ঝারিপানি জলপ্রপাত। মিউনিসিপ্যাল গার্ডেনের লেকে এবং দেরাদুন রােডের ওপর ৬ কিমি দূরে মুসৌরি লেকে নৌকাবিহার করা যায়। লাইব্রেরি বাজার থেকে কনভেন্ট রােড ধরে হেঁটে গেলে মিউনিসিপ্যাল গার্ডেন ২ কিমি। কিন্তু সবচেয়ে সুন্দর জায়গা কেমটি জলপ্রপাত। মুসৌরি থেকে দূরত্ব ১৪ কিমি। ভাড়ার গাড়ি ছাড়াও শেয়ার জিপ এবং বাস যায়। ১৩৭২ মিটার উচ্চতায় কেমটিতে খাড়া পাহাড়ের গা বেয়ে অনেকগুলি ধারায় বিভক্ত হয়ে মৃত্যছন্দে নেমে আসছে জলরাশি। সত্যিই মনােমুগ্ধকর দৃশ্য। কেমটি প্রপাতের তলায় স্নান করতে পারেন পর্যটকরা, খাওয়া সারতে পারেন সংলগ্ন রেস্তোরাঁয়। কেমটিকে পিছনে ফেলে আরও ২০-২১ কিমি এগিয়ে গেলে যমুনা সেতু। তার তলা দিয়ে প্রবল বেগে ফেনা ছড়িয়ে বয়ে চলেছে যমুনা নদী। শুধু তাই দেখতেই মরশুমে দলে দলে পর্যটক ভিড় জমান। নদীতীরে পিকনিকের আসর পাতেন অনেকে। মুসৌরির আরেক আকর্ষণ কেনাকাটা। মরশুমে জমে ওঠে শীতবস্ত্র ও অন্যান্য স্মারকের বাজার। লাইব্রেরি বাজার ও কুলরি বাজারের ঝকঝকে সাজানাে দোকানগুলাে কেনাকাটার সেরা জায়গা শুধু নয়, দেখার জায়গাও বটে। রােজ সন্ধেবেলা ঝলমলে আলােয় সেজে ওঠে জমজমাট বাজার।
0 Comments