The city of Amritsar is one of the centers of Sikh religion and culture in Punjab. The city was built in 156 AD by the fourth Sikh Guru Ramdas during the reign of Mughal Emperor Akbar. He dug a well in the heart of the city. This place is named after him. Chakramadas or Ramdaspur. The Fifth Guru built the 'Harmandir' in the middle of Saravar. The foundation stone was laid by Hazrat Mahim Mir. The water of Sarabar is purified like nectar. The name is Sarabar of Amrit, meaning Amritsar.
পাঞ্জাবে শিখ ধর্ম ও সংস্কৃতির অন্যতম পীঠস্থান অমৃতসর শহর। ১৫৭৭ সালে মুঘল সম্রাট আকবরের শাসনকালে চতুর্থ শিখগুরু রামদাসের হাতে গড়ে ওঠে এই শহর। শহরের প্রাণকেন্দ্রে একটি সরােবর খনন করান তিনি। তারই নামে এই জায়গার নাম হয়। চকরামদাস বা রামদাসপুর। পঞ্চম গুরু সরােবরের মাঝে ‘হরমন্দির’ গড়েন। এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন হজরত মহিম মীর। সরােবরের জল শুদ্ধ করে হয় অমৃততুল্য। নাম হয় অমৃতের সরােবর অর্থাৎ অমৃতসর। শিখ জাগরণের ফলে জাহাঙ্গীর ১৬০৬-এ মৃত্যুদণ্ড দেন শিখগুরু অর্জুনকে। আর অর্জুনপুত্র গুরু হরগােবিন্দ পর পর তিনবার পরাজয়ের পর চতুর্থবার যুদ্ধে ১৬২৯-এ শাহজাহানের রাজকীয় বাহিনীকে পরাজিত করেন। কালে কালে অমৃতসর পবিত্র তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়। ১৭৬১ সালে ‘আহম্মদ শাহ আবদীল’ মন্দিরটি ধ্বংস করেন। আর ১৭৮০-১৮৩৯ সালের মধ্যে রণজিৎ সিং নতুন করে গড়ে তােলেন আজকের তিনতলা মন্দির। মন্দিরের বেশিরভাগ অংশটাই মুড়ে দেন সােনার পাত দিয়ে। সেই থেকে মন্দিরের নাম হয় স্বর্ণমন্দির। এখানকার বিশেষ উৎসব দেওয়ালিতে পুরাে শহরটাই প্রদীপ ও বাজির আলােতে ভরে ওঠে। মন্দিরের দীপ সজ্জা ও আতসবাজি পােড়ানাে দেখার জন্য দূর দূরান্ত থেকে পর্যটকেরা ছুটে আসেন। মন্দিরের প্রবেশ পথে শিখ ইতিহাসের নানা নিদর্শন রয়েছে মিউজিয়ামের প্রতিটি ঘরে। যা দর্শনীয় ও শিক্ষণীয়। মন্দিরের অন্য মিউজিয়ামে রয়েছে হাতে লেখা শিখদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। কেন্দ্রীয় মন্দিরের গম্বুজের সােনারূপার কারুকার্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে। মন্দিরের নিয়ম অনুযায়ী মন্দিরের চত্বরে খালি পায়ে ও মাথা ঢেকে ঢােকা বাধ্যতামূলক। | স্বর্ণ মন্দিরের লাগােয়া সরােবরের ধারে স্বর্ণ গম্বুজশিরে পাঁচতলায় ‘অকাল তত’ অর্থাৎ চিরকালের দেবতার সিংহাসন ভবন। শিখ ধর্মের পার্লামেন্ট হাউস এই অকাল তখত। যে কোনও ধর্মীয় বিধান দেয় শিরােমনি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি। ভাের ৫টা থেকে সারাদিনই গ্রন্থ সাহিব থাকে স্বর্ণমন্দিরে। রাত দশটার সময় শােভাযাত্রা সহকারে ফেরত যায় অকাল তত-এ। সারা দিনই মন্দিরে ‘গ্রন্থ সাহিব’ থেকে অখণ্ড পাঠ চলে। গ্রন্থ সাহিব শিখদের একমাত্র পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। মন্দিরের উত্তর কোণে বাগানের মধ্যে ৪৫ মিটার উঁচু অষ্টকোণাকৃতি নয়তলা বাবা অটল সাহিব গুরুদ্বার। গুরু গােবিন্দের নয় বছরের পুত্র অটলের স্মারকরূপে তৈরি। নিখরচায় আহার মেলে যাত্রীদের এবং থাকার সুব্যবস্থাও আছে। মন্দিরের চত্বরে ধূমপান নিষিদ্ধ। অশােভন কোনও আচরণ দণ্ডনীয়। মন্দিরের অল্প দুরত্বে রয়েছে ইতিহাস খ্যাত ঐতিহাসিক মাঠ জালিয়ানওয়ালাবাগ। ব্রিটিশ রাজের বুলেটের ক্ষত গায়ে নিয়ে আজও নির্বাক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, সাক্ষী এর দেওয়ালগুলি। ভারতবাসীর কাছে অতি পবিত্র এই জালিয়ানওয়ালাবাগ। চারিদিকে বড় বড় বাড়ি। তারই মাঝে এই ময়দান। খুবই সরু এর একমাত্র প্রবেশ পথ। ১৯১৯-এর ১৩ এপ্রিলে কয়েক হাজার ভারতীয়ের সভা বসেছিল এখানে, সামরিক আইন রাওলাট অ্যাক্ট’-এর প্রতিবাদ জানাতে। কুখ্যাত ব্রিটিশ জেনারেল ডায়ার কোনওরকম সুযােগ না দিয়ে তার সেনাদল নিয়ে প্রবেশ পথে দাঁড়িয়ে গুলি বর্ষণ করে নিরস্ত্র জনতার উপর। ওই গুলি বর্ষণে প্রায় ২০০ জন প্রাণ হারান। আরও অনেকে সন্ত্রস্ত হয়ে আত্মরক্ষার্থে কূপের জলে ঝাঁপিয়ে প্রাণ হারান। সেই সব শহীদের অমর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে লাল পাথরের শহীদ স্মারক তৈরি হয়েছে।
বর্তমানে স্বর্ণমন্দির থেকে একটু দূরে হয়েছে বিখ্যাত দুর্গিয়ানামন্দির। শহরের আরেক প্রান্তে ১৬ শতকে গড়ে উঠেছে শ্বেতমর্মরে তৈরি দুর্গামাতার মন্দির। আজও বাঙালি পুরােহিত বংশপরম্পরায় পূজা-চর্চায় রত। দীপাবলীতে এখানে দীপ সজ্জা ও আতসবাজীর মেলা হয়। সে এক অন্য অমৃতসর। ভ্রমণপ্রিয় মানুষেরা অবশ্যই দেখে নেবেন একটু দূরে গােবিন্দগড় দুর্গটি। যা ছিল প্রথমে ভাঙ্গী সর্দারের অধীনে। পরে ১৮০২ সালে রণজিৎ সিং দখল করেন। শহরের আরেক প্রান্তে রামবাগে প্রশস্ত উদ্যানে খেলাধুলার নানান ধরণের সংগঠন গড়ে উঠেছে। উদ্যানে ফুলের শােভা। মনােরম উদ্যানের মাঝে মহারাজের গ্রীষ্মবাসে আজও মিউজিয়াম রয়েছে। এটি রণজিৎ সিং-এর কালে তৈরি আজও এই উদ্যানের শােভা পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
0 Comments