Dalhousie is a place where the double attraction of the inaccessible path of the Himalayas has made people homeless, dragging them to the foot of the silent ceremony of its immense solemnity. This road is more crowded with tourists. The Punyalavis, however, mostly left for Chamba and then Manimahesh for Verma.
ডালহৌসি এমন এক স্থান যোখানে হিমালয়ের দুর্গম পথের দুবার আকর্ষণ মানুষকে নিয়ত করেছে ঘরছাড়া, টেনে এনেছে তার বিশাল গাম্ভীর্যের মৌন সমারােহের পাদদেশে। এ পথে ভ্রমণার্থীদের ভিড়ই বেশি। পূণ্যলােভীরা অবশ্য বেশির ভাগই চলে যান চম্বা এবং তারপর ভারমাের হয়ে মণিমহেশ। আমাদের এ যাত্রায় আমরা পাঠানকোট থেকে ডালহৌসি এবং ডালহৌসি থেকে খাজিয়ার হয়ে চম্বা। পাঠানকোট থেকে মাত্র ৮০ কিলােমিটার দূরে ডালহৌসি। ভারতবর্ষের সেরা হিল-স্টেশনগুলির অন্যতম। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি লর্ড ডালহৌসি এই অঞ্চলে ভ্রমণ করছিলেন। এই জায়গাটা তার খুব পছন্দ হয়ে যায়। তিনিই ব্যবস্থা নেন এটিকে হিল স্টেশন হিসাবে গড়ে তােলার।
অজস্র পাইন দেওদারের সারি, চির সবুজ হিমালয়ের অনবদ্য অরণ্য, পাহাড়ী ঝরনার কলধ্বনি ডালহৌসিকে করেছে অতুলনীয়। দূরে দূরে হিমালয়ের উঁচু উঁচু শৃঙ্গ উন্নত দেওদারের অরণ্যে ছাওয়া। ছবির মতাে সাজানাে পাহাড়ী গ্রাম। সব মিলিয়ে ডালহৌসি নয়নাভিরাম। ডালহৌসির দর্শনীয়গুলি হল - সুভাষ বাউলি, সাতধারা, পাঞ্জপুল্লা, বাক্রোটা হিলস, কালাটোপ, জনপ্ৰীঘাট, বড়পাথর, দইন। কুন্ড। ডালহৌসির প্রাণকেন্দ্র হল এর জেনারেল পােস্ট অফিস। এখান থেকেই বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে আছে ডালহৌসির দর্শনীয়গুলি।
জেনারেল পােস্ট অফিসের ১০.৬ কিলােমিটার দূরে এক সুন্দর ঝরনা। সুভাষ বাউলির উচ্চতা ২,০৮৫ মিটার বা ৬৮৪০ ফুট। এখান থেকে বরফ মােড়া পাহাড় শিখরগুলি অত্যন্ত মনােরম দেখায়।
পাঞ্জপুল্লা যাওয়ার পথে জিপিও থেকে এক কিলােমিটার মত দূরে পড়ে এই সুন্দর ছােট্ট ঝরনা সাতধারা। এখানের লােকের বিশ্বাস এই ঝরনার জলের নানা রকমের রােগমুক্তির ক্ষমতা রয়েছে। দেওদার জঙ্গলের মধ্যে এই ঝরনা এক অনবদ্য আকর্ষণ। এর উচ্চতা ২,০৩৬ মিটার বা ৬৬৭৮ ফুট। জিপিও থেকে ২ কিমি দূরে সাতধরা পেরিয়ে আসে পাঞ্জপুল্লা। একটা প্রাকৃতিক জলাধার থেকে জল পাঁচটি ধারায় বেরিয়ে এসে ঝরনার আকার নিয়েছে। জায়গাটা অরণ্যে ছাওয়া, শান্ত, নির্জন। শুধু পাঁচটি পুলের নীচ দিয়ে বয়ে চলেছে পাঁচটি স্রোত। তাদেরই কলধ্বনির শব্দ ছাড়া আর সবই সুনসান। শহীদ ভগৎ সিংয়ের কাকা সদার অজিত সিং হ মারা যান ১৫ আগস্ট, ১৯৪৭ সালে। এই বিখ্যাত বিপ্লবীর সমাধি তৈরি করা হয়েছে এখানে। তাঁর আত্মার শান্তি সমৃদ্ধতর হচ্ছে। শান্ত সৌন্দর্যের এই নিস্তব্ধ পরিবেশে।
জিপিও থেকে প্রায় ৫ কিলােমিটার দূরে বাক্রোটা পাহাড়। উচ্চতা ২০৮৫ মিটার বা ৬৮৪০ ফুট। এখানে ভ্রমণার্থীরা হেঁটে চলে বেড়ান। দেখেন, পাহাড়ের রূপ, বরফ ঢাকা হিমালয় শিখর।
জিপিও থেকে সাড়ে আট কিলােমিটার দূরে কালাটোপ। ডালহৌসির সবচেয়ে সুন্দর চড়ুইভাতির জায়গা। উচ্চতা ২৪৪০ মিটার বা ৮০০৩ ফুট। কালাটোপ থেকে হিমালয়ের শৃঙ্গগুলির দৃশ্য অপূর্ব। এখান থেকে দেখা যায় কালাটোপ-খাজিয়ার বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের অনেকটাই। ভাগ্য ভালাে থাকলে হরিণ ও ভালুকের দেখা মিলতেও পারে। জিপিও থেকে চকিলােমিটার পাইনের জঙ্গলে পূর্ণ জনীঘাট কালাটোপের মতই আকর্ষণীয়। অনেক সুন্দর সুন্দর বরফ মােড়া শিখর এখান থেকেও দেখা যায়।
জিপিও থেকে চার কিলােমিটার দূরে কালাটোপের পথে পড়ে বড় পাথর। এখান থেকে চার কিলােমিটার দূরে পাহাড়ী গ্রাম আহলা। বড় পাথরে আছে ভুলওয়ানি মাতার সুন্দর মন্দির। জায়গাটা বেশ আকর্ষনীয়।
দইনকুন্ডের উচ্চতা ২৭৪৫ মিটার বা ৯০০৪ ফুট। জিপিও থেকে দূরত্ব প্রায় ১৪ কিলােমিটার। এখান থেকে রৌদ্রকরােজ্জ্বল দিনে বিপাশা, ইরাবতী ও চন্দ্রভাগার দর্শন বহুকাল মনে থাকে। চম্বার রাজার কাছ থেকে ১৮৫০ সালে বৃটিশ শাসকেরা লিজ নিয়েছিলেন ডালহৌসির। ভাইসরয় লর্ড ডালহৌসি তার বহু যুদ্ধে ক্লিষ্ট জীবনের শান্তি খুঁজে পেয়েছিলেন এখানে। রণ-ক্লান্ত ডালহৌসি তার শেষ জীবনের আবাস গড়ে তােলেন এই অফুরন্ত সৌন্দর্যের দেশে। ফলে ডালহৌসির প্রথম অধিবাসীরা ছিলেন লর্ড ডালহৌসি নিজে এবং তার কর্মচারীবৃন্দ। ধীরে ধীরে বৃটিশরা এখানে নতুন নতুন বসতি স্থাপন করেন। বিশেষ করে সেনাবাহিনীর বৃটিশ সৈনিকরা তাদের অবসর জীবন-যাপনের জন্য এখানে বসবাস শুরু করেন। ২০৩৯ মিটার বা ৬৬৯০ ফুট উচ্চতায় আজকের ডালহৌসির জনসংখ্যা প্রায় চল্লিশ হাজার।
0 Comments