ত্রিপুরার পর্যটন দফতরের আমন্ত্রণে হাজির হয়েছিলাম ‘ভারত—বাংলা পর্যটন উৎসবে। ত্রিপুরা পর্যটন দফতরের ম্যানেজিন ডিরেক্টর বিশ্বশ্রী বি আই এ এস, তাঁর সাক্ষাতের সময় চেয়েছিলাম । অসম্ভব কর্মঠ বুদ্ধিদীপ্ত, সদাহাস্যময়ী সর্ববিষয়ে ভীষণ সচেতন এক মহিলা। পর্যটন পত্রিকার পক্ষ থেকে সম্পাদক সুশোভন ব্যানার্জ্জী আলোচনা শুরু করেন। 


পর্যটন : অসম্ভব ব্যস্ততার মধ্যে সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনাকে প্রথমেই বলি সুন্দর সফল অনুষ্ঠানের পর ত্রিপুরার পর্যটন শিল্পে উন্নতির জন্য আপনি কোন কোন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেবেন?

  • ত্রিপুরার পর্যটন শিল্পে পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা আছে। প্রথমেই সেগুলি সমাধানের চেষ্টা করা। সঙ্গে সঙ্গে মার্কেটিং এবং প্রমোশনের চেষ্টা করা।

পর্যটন : পশ্চিমবঙ্গ—বাংলাদেশ—ত্রিপুরা এই তিনটি রাজে্যর ভাষা, সংস্কৃতির প্রচুর মিল। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের মত পশ্চিমবঙ্গ পর্যটকদের উদ্বুদ্ধ করতে আপনার পরিকল্পনা কি?

  • দেখুন, আমরা পশ্চিমবঙ্গ পর্যটকদের সম্বন্ধে মোটামুটি মূল্যায়ন করেছি। বিশেষ করে যুব সমাজের জন্য। এরা অনেক বেশী অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। ফলে ওয়াটার স্পোর্টস, ট্রেকিং, ইকো টু্যরিজম প্রভৃতি দিকে জোর দিয়েছি। এবং তাদের জানানোর চেষ্টা করছি। এমনকি প্রত্যন্ত গ্রামের পর্যটকরা যাতে জানতে পারেন আমরা সে দিকে লক্ষ্য রাখছি।

পর্যটন : ভারত—বাংলা পর্যটন উৎসব হিসাবে ভাষা দিবসের আগের দিনকে নির্বাচিত করার উদ্দেশ্য যদি বলেন

  • আপনাদের দূর্গাপুজো, মহারাষ্ট্রের গণেশ পুজো আবার দেওয়ালী, দশেরা প্রভৃতি প্রতিটি রাজে্যর একটা নিজস্ব দিন আছে। আমরা বিজ্ঞাপনের জন্য নয় ভাষা শহিদদের সম্মান জানানোর পাশাপাশি দুই দেশের মানুষের মিলনে পর্যটন শিল্পের প্রসার হবে বলে মনে করি। এবং এই ২০ ফেব্রুয়ারী দিনটি ত্রিপুরার নিজস্ব দিন হিসাবে প্রতি বছর পালন করবে।

পর্যটন : অামার মনে হয় আপনি আপনার সামর্থ সমন্ধে সচেতন। আপনি নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন ভারত—বাংলাদেশ মৈত্রী উদ্যানে খাদ্য—পানিয়ের অভাব রয়েছে। কি ভাবে এর সমাধান ভাবছেন ?

  • আমি প্রথমেই বলেছি পরিকাঠামোগত কিছু সমস্যা আছে। তবে, ‘পর্যটন সহায়ক প্রকল্প’ নামে ত্রিপুরা সরকার সম্প্রতি একটি প্রজেক্ট নিয়েছেন এবং তার রিপোর্ট জমা পড়েছে। খুব শীঘ্রই এগুলোর সমাধান হবে বেল আমার বিশ্বাস।

পর্যটন :  ত্রিপুরায় প্রবীন পর্যটক বা দলবদ্ধ ছাত্রছাত্রীদের কি বিশেষ কোন ছাড় আছে?

  • প্রবীন পর্যটকদের থাকার জন্য কতটুকু কনসেশন করা যায় তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে। আর ছাত্র—ছাত্রী প্রতিষ্ঠানের পরিচয় পত্র সহ দলবদ্ধভাবে আসলে তাদের কোনও জায়গায় প্রবেশমূল্য লাগবে না।

পর্যটন : প্যাকেজ টু্যর না সাধারণ ভ্রমণ কোনটি আপনারা বেশী পছন্দ করছেন?

  • অবশ্যই প্যাকেজ টু্যর কারন আমাদের প্রতিটি প্যাকেজ টু্যর সুন্দরভাবে সাজানো এবং পুরো ব্যাপারটি আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা সুন্দরভাবে পরিচালনা করেন তবে সবরকম ভ্রমণকারীকে আমরা আমন্ত্রণ জানাই।

পর্যটন : আমার শেষ প্রশ্ন, আমাদের মনে হয়েছে গত প্রায় দু—বছর ত্রিপুরা পর্যটন প্রকাশ্যে উপস্থিত হয়নি কিন্তু আজকের অনুষ্ঠানের পর মনে হচ্ছে আপনারা বেশীরকম পর্যটন শিল্পের প্রসারে উৎসাহী হয়ে পড়েছেন।

  • না, হাজির ছিলাম। তবে দীর্ঘদিন পরে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। ফলে পর্যটন শিল্পের কোথায় কিভাবে আছে তার ময়নাতদন্ত করে ঘাটতি পুরণের ব্যবস্থা করছি। আশা করি অচিরে আমরা স্ব—মহিমায় হাজির হব। আর গতদিন আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য তো শুনলেন। অনেক নতুন নতুন পরিকল্পনাও সরকার থেকে নেওয়া হচ্ছে।

অশেষ ধন্যবাদ। আপনি ভাল থাকুন এবং পর্যটন উন্নতির জন্য আপনার চেষ্টা সফল হোক এই প্রার্থনা করি।

আপনিও ভাল থাকবেন এবং আমাদের পরবতর্ী অনুষ্ঠানে আপনাকে আমন্ত্রণ জানাবো অবশ্যই আসবেন।

নিজেই চেয়ার ছেড়ে এগিয়ে এসে সৌজন্য প্রকাশ করলেন। পর্যটন পত্রিকার উপহার সমস্ত বই নিজে হাতে সংগ্রহ করে এগিয়ে চললেন।

ছবি : লেখক